চোরের দাপটে রাতের ঘুম উড়ে গেছেরূপনারায়ণপুর বাসির ,,অসহায় পুলিশি ব্যাবস্থা
কাজল মিত্র: সালানপুর:-মাত্র এক রাতের জন্য বাড়ি বন্ধ করে বাইরে গিয়েছিলেন গৃহকর্তা, আর তার মধ্যেই ভয়ঙ্কর চুরি হয়ে গেল রূপনারায়ণপুর গ্রামের মত ঘন সন্নিবদ্ধ এলাকায় এই চুরির ফলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গত একমাসে মধ্যে রূপনারায়ণপুর ও সংলগ্ন এলাকায় পাঁচটি বড়সড় চুরির ঘটনা ঘটে গেল তবুও ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে রয়েছে পুলিশ প্রশাসন ।এখনো পর্যন্ত কেউ ধরা পরেনি ।
মাত্র দুই চারদিন আগেই রূপনারায়নপুর গোলাপ বাগানে চুরির পর আবারো রূপনারায়ণপুর দুর্গামন্দির রোডের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত কর্মী শুভাশিস তেওয়ারির বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটলো। ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায় যে ৭ অক্টোবর তিনি ও তার স্ত্রী বীণা তেওয়ারিকে নিয়ে ঝাড়খণ্ডের নলা সারসকুন্ডায় আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন । প্রতিবেশীদের মারফত আজ সকালেই জানতে পারেন তার বাড়ির তালা ভেঙ্গে চোরেরা সর্বস্ব লুট করে নিয়ে গেছে। রূপনারায়ণপুর বাসন্তী মন্দির এলাকায় এমন ঘটনায় স্থানীয়দের চোখ কপালে উঠেছে। বিষয়টি জানতে পেরেই দ্রুত রূপনারায়ণপুরে ফিরে আসেন শুভাশিস বাবু। এরপরই ঘরের হাল দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্ত্রী বীণা দেবী। তারা বলেন প্রায় ৬ ভরি সোনার গয়না, দেড় লক্ষ টাকা নগদ এবং সমস্ত নতুন শাড়ি জামাকাপড় চোরেরা নিয়ে গেছে। মেয়ের গয়না গাটিও তাদের কাছেই ছিল বলে বীণা দেবী জানান তিনি বলেন মাত্র এক রাতের জন্য একটি বিশেষ পুজো উপলক্ষে সারসকুণ্ডায় গিয়েছিলেন। গ্রামের মধ্যে চারিদিকে বাড়ি, তার মধ্যেও এইভাবে চুরি হয়ে যাওয়ায় অত্যন্ত আতঙ্কিত এলাকাবাসী। এখানকার বাসিন্দা সমাজকর্মী তথা রূপনারায়ণপুর পঞ্চায়েত সদস্য রাণা মাহাতো বলেন, চোরেরা কিভাবে বাড়ি বন্ধ থাকার তথ্য জানতে পারছে তা অত্যন্ত সন্দেহজনক। তিনি বলেন, হঠাৎ করেই কিছুদিন আগে এক যুবক এসে বলেন তিনি রাত পাহারা দেবেন। সাইকেল নিয়ে সেই যুবক পাহারার কাজে লেগে যায়। কিন্তু তার নাম পরিচয় কিছুই সে জানায়নি। পাহারাদার থাকা সত্ত্বেও কিভাবে তাহলে চুরির ঘটনা ঘটছে তাই নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এলাকার বাসিন্দারা অবিলম্বে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা সহ পুলিশের আরো নজরদারির দাবী জানিয়েছেন। রাণা বলেন রূপনারায়ণপুর ক্রমশ বড় হচ্ছে। একসময়ের সাতটি বুথ থেকে এখন এই পঞ্চায়েতের বুথ সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২১ টি। কিন্তু পুলিশী ব্যবস্থা সেই আগের মতই রয়ে গেছে। বাড়ি বন্ধ থাকলেই অনায়াসে চোরেরা সেখানে হানা দিয়ে যাবতীয় লুট করে নিয়ে চলে গেলেও তার কোন কিনারা হচ্ছে না বলে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ঘটনার সংবাদ পেয়ে রূপনারায়ণপুর পুলিশ সেখানে যায়। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান তৃণমূল নেতা ভোলা সিং। তিনি আরো কড়া পুলিশি পদক্ষেপের আর্জি জানান।
এদিকে পুলিশ রূপনারায়ণপুরের বিভিন্ন এলাকাতে নতুন করে উন্নত মানের সিসি ক্যামেরা বসালেও এখনো রূপনগর সহ বেশ কিছু এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে আছে বলে জানা গেছে। সেইসব এলাকাগুলিতে দ্রুত সিসি ক্যামেরা বসানোর পাশাপাশি রাত পাহারার নিয়মিত ব্যবস্থা করারও উদ্যোগ নিচ্ছে পুলিশ।
তবে একের পর এক চুরির ঘটনায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন স্থানীয় মানুষজন। উপর্যুপরি চুরির ঘটনায় ব্যতিব্যস্ত পুলিশও। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা আসানসোল সংলগ্ন এলাকা থেকে নিয়মিত এই অঞ্চলে দুষ্কৃতীদের দল আসছে এবং সফল অপারেশন করে পালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় দুই একটি অঞ্চল থেকেও অপরাধ প্রবণ যুবকেরা তাদের সহযোগিতা করছে বলে অনুমান। এখন পুলিশকেই এদের ধরে উপযুক্ত সাজার ব্যবস্থা করতে হবে বলে স্থানীয় মানুষজন দাবি জানান।
Comments
Post a Comment